অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নিজেরই প্রেমিকাকে খুন করে ৩৫ টুকরা করলেন এক যুবক। এরপর সেগুলোকে রাখলেন ফ্রিজে। ১৮ দিন ধরে দেহের টুকরাগুলো দিল্লির মেহরাউলি জঙ্গলে ছড়িয়ে দিয়েছেন সেই যুবক। মর্মান্তিক এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, প্রেমের টানে পরিবার, চাকরি, শহর ছেড়ে দিল্লিতে চলে এসেছিলেন ২৬ বছরের শ্রদ্ধা। স্বপ্ন দেখেছিলেন ঘর বাঁধবেন ২৮ বছরের প্রেমিক আফতাব আমীন পুনাওয়ালার সঙ্গে। তারা বেশ কিছুদিন ধরে লিভ ইন করে আসছিলেন। কিন্তু নিয়মিতই আফতাবকে বিয়ের জন্য চাপ দিতেন শ্রদ্ধা। এই নিয়ে তাদের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকতো বলে জানা যায়।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, শ্রদ্ধা ওয়াকারকে ১৮ মে তারিখে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। তারপর তারে দেহের ৩৫ টুকরা করা হয়। টুকরাগুলো সংরক্ষণের জন্য ৩০০ লিটারের ফ্রিজ কিনেছিলেন আফতাব। প্রতিদিন রাত ২ টার সময় টুকরা গুলিকে জঙ্গলে ফেলে আসতেন। এভাবে টানা ১৮দিন ধরে তিনি এই কাজ করেছেন। অভিযুক্তকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
দক্ষিণ জেলার অতিরিক্ত ডিসিপি-আই অঙ্কিত চৌহান বলেন, ‘মুম্বাইতে কাজ করার সময় দুজনের প্রেম হয় এবং তাদের পরিবারের বিরোধিতার মুখোমুখি হওয়ার পর এপ্রিলের শেষ বা মে প্রথম সপ্তাহে দিল্লিতে চলে আসেন তারা। এরপর থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাদের মধ্যে বিয়ে নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। এক সময় তা বাড়তে থাকে এবং মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।’
২৬ বছর বয়সী শ্রদ্ধা মুম্বাইয়ের একটি বহুজাতিক কোম্পানির কল সেন্টারে কাজ করতেন যেখানে পুনাওয়ালার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর দুজনে ডেটিং শুরু করেন এবং লিভ ইন করা শুরু করেন। কিন্তু তার পরিবার তাদের সম্পর্ক না মেনে নেওয়ায় তারা বাড়ি ছেড়ে দিল্লিতে চলে আসেন। দিল্লির মেহরাউলিতে একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন তারা।
এর পরেই তার এক বন্ধু শ্রদ্ধার ভাইকে জানায় যে তার ফোন ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। ৮ নভেম্বর তার বাবা বিকাশ মদন ওয়াকার তার মেয়েকে দেখতে দিল্লিতে আসেন এবং তার ফ্ল্যাটে তালা দেখতে পান। এরপর তিনি মেহরাউলি পুলিশের কাছে গিয়ে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন।
তার অভিযোগে ওয়াকার বলেছেন, পুনাওয়ালা যে শ্রদ্ধাকে প্রায়শই মারধর করতেন এটা তাকে জানানো হয়েছিল।
এর ভিত্তিতে শনিবার পুনাওয়ালাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তের সময় তিনি বলেছিলেন, শ্রদ্ধা তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল বলে দুজনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, বন থেকে কিছু দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে তবে সেগুলি মানুষের দেহাবশেষ কিনা তা জানা যায়নি। অভিযুক্তের ব্যবহৃত ছুরি এখনও পাওয়া যায়নি। তবে পুনাওয়াল প্রশিক্ষিত শেফ ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Leave a Reply